আত্মরতি
পদ্মার কোল ঘেষে বালুর পতিত শহর। সেই শহরে একমাত্র আধিপত্য ফুলুর। একটা রক্তিম সূর্যের স্নান করতে করতে জন্ম নেবার সময় থেকে রাতের কোলে ঢলে পড়ার পর্যন্ত এখানেই ফুলুর মাথার ভেতরে থাকা শহর,বাড়ী, মানুষ বালিতে বানায় সে। ডাঙ্গুলী, ঘুড়ি উড়ানো, লাফ ঝাপ, সাতার, দৌড়
বিভিন্ন খেলায় সময় কাটে তার।নাওয়া খাওয় ছেড়ে ছুড়ে এই সবে নিমগ্ন হয় সে।
একদিন সকালে বালুতে খেলছিলো সে। দূরে এক জোড়া প্রেমিক প্রেমিকা ঘুরতে এসে হাতে একটা মোবাইল নিয়ে সেলফি তুলছিলো তারা । হঠাৎ করে একজন ছিন্তাইকারি যেতে যেতে হাতে চট করে মেয়েটির ব্যাগটি নিয়ে দৌড় দেয় এতে করে সেল্ফি তোলা মোবাইলটি মাটিতে পড়ে যায়। তার দুজনেই চোরের পিছনে পিছনে দৌড়াতে থাকে ও মোবাইলের কথা তার ভুলে যায়। ফুলু এসকল ঘটনা দূর থেকে অবলোকন করে। কেউ আসেনা ফিরে, ফুলূ কাছে গিয়ে ফোনটার দিকে তাকায়। ক্যামেরা চালু থাকায় নিজেকে দেখতে পায় সে। অনেক মজা পেয়ে ফোনটা হাতে তুলে নেয়।টাচ লেগে একটা ছবি উঠে শব্দ হলে সে ভয় পেয়ে যায় । এরপর ও অনুকরণ করে ওদেও মত করে ছবি তুলে দেখে। অতপর ফোন হাতে ফুলু হাটতে থাকে। ফুলু ক্যামেরায় তাকানোর জন্য নদীর পাড়ে বসে বালু দিয়ে ঘসে ঘসে মুখ পরিষ্কার করে। এর পরে বন্ধুরা এসে খেলতে থাকে। ফুলুকে ডাকে, সে খেবে না বলে চলে যায়। বন্ধুরা একটা বল নিয়ে মারা মারি শুরুকরে আর সে দূর থেকে সেলফী তোলে। এর পর নদীর ধারে কিছু নারীর পানি নেয়ার সেলফী তোলে এবং বনে চলে যায়। বনে গাছের উপর উঠে পাখির বাসার সাথে ছবি তোলে। নিচে নামতে গিয়ে পা কেটে যায়, সে কাটা পায়ের সেলফি তোলে। কিছু দূর এসে দেখে গাছে একজনের লাশ ঝুলে আছে, ফুলু সেই লাশের সাথেও ছবি তোলা বাদ দেয় না। এর পরে হন্ত দন্ত হয়ে লাশ লাশ বলে চিৎকার করতে করতে ওখান থেকে ছুটে যায়। তারপর তার প্রসাবের চাপ দেয় সে প্রাসব করার ছবি তোলে এবং লাশের কথা ভুলে যায়। ফুলু ছবি তোলাতে যত মগ্ন হয় ততই সে তার সৃষ্টিশীল জগত থেকে সরে যায়। এমন কি একদিকে সে ছবি তোলে আরেক দিকে তার বানানো বালুর শহর ধীরে ধীরে খয় হতে থাকে।
বাসায় আসলে মা খেতে দিলে উৎসাহে অল্প খেয়েই ঘরে যায় সে। ঘুমানোর সময় সে তার বাবাকে স্বপ্নে দেখে ডাস্টবিনের পাশে খাবার তুলে খাচ্ছে। সে উৎসাহে দৌড় দেয়মাকে বলবে মাঝ পথে রেল লাইনে সেলফী তোলে ট্রেন এসে তাকে ধাক্কা দেয়। ফুলুর ঘুম ভেঙ্গে যায়, সে দু:স্বপ্ন দেখে। সে ঘুম থেকে উঠে ফোন টা হাতে নেয় ও জোড়ে ছুটতে থাকে। ফোনটা ফেলে দেয় ও হাটা শুরু করে। অর্ধেক পথে হেটে দেখে ফোনটা তার সাথে সাথে আসছে ।।।।।।
অসাধারন ! ! ! ! ! ! !
ReplyDelete